আযানের পূর্বে স্বশব্দে সালাত ও সালাম পাঠ করা কি?
বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে, কিছু কিছু স্থানে আযান শুরু করার পূর্বে মুয়াজ্জিন সাহেব আযান দেওয়ার স্থানে দাঁড়িয়ে প্রথমে স্বশব্দে (জোরে জোরে) সালাত ও সালাম পাঠ করে নিচ্ছেন, তারপরে আযান দিচ্ছেন। এর হুকুম কি, এটা বৈধ কিনা; তা নিয়ে প্রশ্ন আসতে শুরু করেছে। ভবিষ্যাতে ফুরফুরা সিলসিলার অনুসারিরা এটাকে কিভাবে গ্রহণ করবে, এটা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
প্রথমেই বলে
রাখি, নামাযে
তাশাহ্হুদ (আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি....) ও শেষ বৈঠক ছাড়া সালাত ও সালাম পাঠের জন্য
কোনো সময় নির্দিষ্ট ও নির্ধারিত নেই। রাত দিন চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে যে কোনো সময়
সালাত ও সালাম পড়া যায়। কোনো নেক কাজ শুরু করার পূর্বেও সালাত সালাম পড়া যায়। যেমন
কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা। বিসমিল্লাহ না বলে কাজ শুরু করলে সে কাজ বরকত শুণ্য
হয়ে যায়। তাই সকল কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা সুন্নাত। অনুরুপ
আযানের শুরুতেও বিসমিল্লাহ বলা যায়। এখন প্রশ্ন হলো, আমরা কি বিসমিল্লাহ জোরো জোরে ও
স্বশব্দে বলি, নাকি
আস্তে আস্তে বলি?
যদি বলা হয়, সকল কাজের
শুরুতে “বিসমিল্লাহ..” আমরা আস্তে আস্তে পাঠ করি, তাহলে বলবো, আযানের
শুরুতে সালাত ও সালাম কেনো জোরো জোরে ও স্বশব্দে বলতে হবে?
মসজিদে
প্রবেশ করার সময় যে দোয়া আমরা পাঠ করি সে দোয়ার শুরুতেও বিসমিল্লাহ ও নবীপাক স.র
প্রতি সালাত সালাম পাঠ করা হয়। পূর্ণ দোয়াটি এভাবে বলা হয় “বিসমিল্লাহি ওয়াস
সালাতু ওয়াস সালামু আলা রাসূলিল্লাহি আল্লাহুম্মাফ তাহলী আবওয়াবা রাহমাতিক”।
অনুরূপভাবে
মসজিদ হতে বের হওয়ার সময় যে দোয়া পাঠ করা হয় সে দোয়ার শুরুতেও বিসমিল্লাহ ও নবীপাক
স.র প্রতি সালাত ও সালাম রয়েছে। পূর্ণ দোয়াটি হলো, “বিসমিল্লাহি ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু
আলা রাসূলিল্লাহি আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা মিন ফাদলিক”।
আমরা কি
মসজিদে প্রবেশের সময় বা মসজিদ হতে বের হওয়ার সময় সালাত ও সালাম জোরে জোরে পড়ি? পৃথিবীর
কোনো মানুষ কি এ সময় সালত ও সালাম জোরে জোরে পড়ে?
এসব অবস্থায়
সালাত ও সালাম যদি আস্তে আস্তে পড়া হয় তাহলে আযানের শুরুতে সালাত সালাম জোরে জোরে
পড়ার প্রশ্ন কেনো আসছে?
সালাত ও
সালাম জোরে জোরে পড়া বৈধ হওয়ার কিছু স্থান রয়েছে। যেমন, খুতবার
মধ্যে যখন সালাত ও সালাম জোরে পড়া হয় তখন তা যেমন সালাত ও সালাম হিসেবে গন্য হয়
তেমন খুতবা হিসেবেও গন্য হয়।
কোনো
সমাবেশে যখন কেউ দরুদ ও সালাম পাঠ করতে বলে তখন জোরে বা আস্তে উভয় পদ্ধতিতে দরুদ ও
সালাম পাঠ করা সকলের জন্য জায়েজ।
এখন কেউ প্রশ্ন করতে পারেন, জোরে পড়ার উপরে কি কোনো নিশেধাজ্ঞা আছে?
আমরা বলব, সালাত ও সালাম জিকিরের অন্তর্ভুক্ত। আর জিকিরের মূল হলো আস্তে হাওয়া।
No comments