ইসলামে সংক্রামক রোগ বলতে কি কিছু নেই? (পর্ব ১)


 এ বিষয়ে আলোচনার শিরোনামসমূহ 


ইসলামের দৃষ্টিতে করোনা ভাইরাস বা কোভিট-১৯ অথবা এ জাতীয় কোনো রোগ কি সংক্রামক হতে পারে? এ বিষয়ে বিভ্রান্তিসমূহ।


প্রথম ও দ্বিতীয় বিভ্রান্তির জবাব


  •     ইসলামের দৃষ্টিতে বিজ্ঞানের আবিস্কার
  •     ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার ব্যাপারটিও ঠিক তদ্রুপ
  •     ভাইরাসের স্রষ্টা কে?
  •     ভাইরাস কি সংক্রমিত হয়? এ বিষয়ে ইসলাম কি বলে?
  •     সংক্রামক রোগ বিষয়ে ইসলামের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা
  •     রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
  •     হাদীসে “সংক্রমণ নেই” কেনো বলা হলো?
রোগ-জীবাণু ও সংক্রামক রোগ বিষয়ে হাদীসসমূহ
  •     মাছির ডানা সংক্রান্ত হাদীস
  •     কুকুরের লালা সংক্রান্ত হাদীস
  •     পানির পাত্রে শ্বাস না ফেলা সংক্রান্ত হাদীস
  •          নাক ও ফুসফুসের কাজ কি?
  •         রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম কি এগুলো দেখতে পেতেন?
  •         একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা
  •     রোগাক্রান্ত উট ও সুস্থ উট সংক্রান্ত হাদীস
  •     পাত্র ঢেকে রাখা সংক্রান্ত হাদীস
  •     মহামারীতে ধৈর্য ধারণ ও শহীদের সওয়াব অর্জন সংক্রান্ত অন্যান্য হাদীস
  •     কুষ্ঠ রোগ, কুলক্ষণ ও রোগের সংক্রমণ সম্পর্কিত আরো হাদীস
  • সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে সাহাবায়ে কেরামের (রা.) বিশ্বাস ও কর্মপন্থা
  • ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগের বিষয়ে আইম্মায়ে কেরামের বক্তব্য ও তাঁদের কর্মপন্থা
তৃতীয় বিভ্রান্তি ও তার জবাব
চতুর্থ বিভ্রান্তি ও তার জবাব
  • মহামারীতে আক্রান্ত ভূখণ্ডে প্রবেশ বা তার থেকে বের হওয়ার হুকুম
  • মহামারী আপতিত ভূখণ্ডে থেকে বের না হওয়ার হেকমত
  • ওযরের মুহূর্তে মসজিদের জামায়াতে ও জুময়ার নামাযে অংশগ্রহণ না করার বিষয়ে শরীয়তের ফয়সালা
        গুরুত্বপূর্ণ আরো কয়েকটি মাসয়ালা
        আবেগ দিয়ে শরীয়তের ফয়সালা হয়না
মৌলিক ভাবে যা আমরা জানতে পারলাম
এ সংকটময় মুহূর্তে আমাদের কি করা উচিৎ



বিস্তারিত

الحمد لله وكفى وسلام على عباده الذين اصطفى أما بعد

ডিসেম্বর-২০১৯ এ প্রথম যখন চীনের উহান শহরে করোনা বা কোভিড-১৯ ভাইরাস আক্রান্তের কথা শোনা গেল তখন কেউ কি ভেবেছিলেন যে, এর প্রভাবে সারা বিশ্বের গতিই সম্পূর্ণরূপে ঘুরে যাবেসারা পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষকে গৃহবন্দীর জীবন পার করতে হবে? কিন্তু হয়েছে তাই। বড় বড় ক্ষমতাধর ও আধুনিক বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধানরাও এর থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। আল্লাহ্ তায়ালার এ ক্ষুদ্র অণুজীবের ভয়ে তারা সকলে এখন ইঁদুরের ন্যায় গর্তে লুকিয়ে রয়েছেন। 

আজ ৪ এপ্রিল-২০২০ পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী করোনায় বা কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত প্রায় ১২ লক্ষ মানুষ এবং এ পর্যন্ত মৃত্যু ৬০ হাজারের অধিক। বলা হচ্ছে, কোনো কোনো রাষ্ট্র মৃতের প্রকৃত সংখ্যা গোপন করেছে। তাই যদি হয়, সারা পৃথিবীতে এ পর্যন্ত কত লক্ষ মানুষ যে মারা গিয়েছে তার সঠিক হিসাব এবং এ সংখ্যা কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা কারোর জানা নেই। 

করোনা বা কোভিড-১৯ নামক এ ভাইরাস যে এত দ্রুত আধুনিক এ পৃথিবীকে প্রায় অকেজো করে দেবে তা আমরা কেউ ভাবিনি। প্রত্যেক মুমিনের এ বিশ্বাস রয়েছে, আল্লাহ্ তায়ালা মুহূর্তের মধ্যে সব পরিবর্তন করে দিতে পারেন। তাঁর ক্ষমতার বাইরে কোনো ক্ষমতা নেই। একটা হলো বিশ্বাস করা, আরেকটা হলো দেখা। এ দুটির মাঝে পার্থক্য রয়েছে। করোনা ভাইরাসের মাধ্যমে মুমিন বান্দারা ক্ষণিকের জন্য হলেও যেন আল্লাহ্ তায়ালার ক্ষমতা বাস্তব রূপে সামান্য কিছুটা হলেও স্বচক্ষে দেখতে পাচ্ছেন।

প্রশ্ন হলো, ইসলামের দৃষ্টিতে করোনা ভাইরাস বা কোভিট-১৯ অথবা এ জাতীয় কোনো রোগ কি সংক্রামক হতে পারে?

অনেকের মধ্যে এ সম্পর্কে বর্তমানে যথেষ্ট বিভ্রান্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

প্রথম বিভ্রান্তি হলো, ভাইরাস বলতে কিছু নেই।

দ্বিতীয় বিভ্রান্তি, ইসলামে সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগ বলতে কিছু নেই। তারা আরো বলছেন, ছোঁয়াচে রোগ বলতে কিছু একটা আছে- এরূপ বিশ্বাস করা শিরকের নামান্তর।

তৃতীয় বিভ্রান্তি, যেসব হাদীস সংক্রামক রোগের পক্ষে যায় সেগুলো দুর্বল ঈমানদারদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। 

চতুর্থ বিভ্রান্তি হলো, মুসলমানদের করোনা আক্রমণ করবে না। যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করেন তাদেরকে কখনো করোনা আক্রমণ করতে পারবে না। আশ্চর্যের বিষয় হলো এ কথাগুলো অনেক সময় আলিম, খতীব, পীর সাহেব বা পীরজাদা, মাদরাসার উস্তাদ ও বক্তাদের মুখ থেকেও বের হচ্ছে। অনেকে বলছেন, মুসলমানদেরকে করোনায় আক্রমণ করলে কুরআন-হাদীস মিথ্যা হয়ে যাবে (নাউযুবিল্লাহ)।

শুধুমাত্র অজ্ঞতা ও জাহালাতের কারণে এসব কথা মুখ থেকে বের হতে পারে। নতুবা জ্ঞানী ও কুরআন হাদীসের সহীহ ও সঠিক ধারণা যাদের আছে তারা এ ধরনের কথা বলতে পারেননা।

প্রথম ও দ্বিতীয় বিভ্রান্তির জবাব

যারা বলছেন, ভাইরাস বলতে কিছু নেই তাদের দাবি ভ্রান্ত। আর যারা বলছেন, সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগ বলতে কিছু নেই তাদের এ দাবীও পুরোপুরি সঠিক নয়। আর শিরকের কথা বলা অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি।

আমাদেরকে প্রথমে বুঝতে হবে এবং বিশ্বাস রাখতে হবে,

১. সব কিছু আল্লাহ্ তায়ালার সৃষ্টি, তাঁর সৃষ্টির বাইরে অন্য কোনো সৃষ্টি নেই।

২. সৃষ্টিজগতের মাঝে যা কিছু হয় সবই আল্লাহ্-র হুকুমে হয়। তাঁর হুকুমের বাইরে কিছুই হয় না।

৩. সব কিছু তিনিই নিয়ন্ত্রণ করেন, তাঁর নিয়ন্ত্রণের বাইরে কিছুই নেই। -(সূরা (০৬) আনয়াম, আয়াত-৫৯. “অদৃশ্যের কুঞ্জি তাঁরই নিকট রয়েছে, তিনি ব্যতীত অন্য কেউ তা জানেনা। জলে ও স্থলে যা কিছু আছে তা তিনিই অবগত, তাঁর অজ্ঞাতসারে একটি পাতাও পড়ে না। মৃত্তিকার অন্ধকারে এমন কোনো শস্যকণাও অংকুরিত হয়না অথবা রসযুক্ত কিংবা শুষ্ক এমন কোনো বস্তু নেই যা সুস্পষ্ট কিতাবে নেই।”)

৪. আল্লাহ্ তায়ালা সরাসরি যেমন সৃষ্টি করেন তেমন মাধ্যম, উপকরণ বা কার্যকারণের দ্বারাও সৃষ্টি করেন। মাধ্যম, উপকরণ বা কার্যকারণও তাঁরই সৃষ্টি। -(ইমাম ফখরুদ্দীন মুহাম্মাদ ইবনে আমর আর রাযী রহ. (অফাত-৬০৬ হি:) মায়ালিমু উসূলিদ দ্বীন।)

এ মাধ্যম, উপকরণ বা কার্যকারণকে আমরা ইসলামী পরিভাষায় ‘ছাবাব’ বলি। এই ছাবাব বা কারণকে ইসলামের কোনো মনীষীই অস্বীকার করেননি। আমরা আকীদা কেন্দ্রীক কঠিন আলোচনায় না যেয়ে এ ‘ছাবাব’ তথা উপকরণ বা কার্যকারণকে  খুব সহজে বোঝার চেষ্টা করব, ইন্শাআল্লাহ্।

ছাবাব’ তথা উপকরণ বা কার্যকারণকে আমরা ২ ভাগে ভাগ করতে পারি।

(১) ছাবাব বা কার্যকারণের সাথে ঘটনা বা ফলাফল (মুছাব্বাব) অনাবশ্যক।

(২) ছাবাব বা কার্যকারণের সাথে ঘটনা বা ফলাফল (মুছাব্বাব) আবশ্যক তথা ফলাফল অবশ্যম্ভাবী বা জরুরী।

প্রথমটির উদাহরণ হলো-‘নারীর গর্ভে সন্তান আসা’। নারীর গর্ভে সন্তান আসার কারণ হলো উপযুক্ত বয়সে নারী-পুরুষের একত্র হওয়া। এটি সর্বস্বীকৃত সাধারণ প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই আল্লাহ্ তায়ালা পৃথিবীতে মানুষ পয়দা করেন। এ প্রক্রিয়াকে আমরা সন্তান গর্ভধারণের কারণ তথা ‘ছাবাব’ বলতে পারি। তবে এ কারণটি পাওয়া গেলে শিশু গর্ভে আসার ঘটনা যে ঘটবেই তথা ফলাফল যে পাওয়া যাবেই-তা নয়। অর্থাৎ এই কার্যকারণটি ফলাফলের জন্য (মুছাব্বাবের জন্য) অবশ্যম্ভাবী নয়। এই প্রক্রিয়াটি আল্লাহ্ প্রদত্ত, তাঁরই সৃষ্ট এবং তিনিই এর নিয়ন্ত্রণ করেন। ফলে এর ব্যতিক্রম তথা নারী-পুরুষের একত্র হওয়া ছাড়াও আল্লাহ্ তায়ালা মায়ের উদরে শিশুর আগমন ঘটাতে পারেন। যাকে আমরা স্বভাবত “অসম্ভব” বলে থাকি। কিন্তু আল্লাহ্ তায়ালার জন্য অসম্ভব বলতে কিছুই নেই।  যেমন বয়বৃদ্ধা ও বন্ধ্যা মায়ের গর্ভ থেকে হযরত ইয়াহ্ইয়া আ.-এর জন্ম  এবং পুরুষের স্পর্শ ছাড়াই হযরত ঈসা আ.-এর আগমন । এখানে স্বামী-স্ত্রীর একত্র হওয়ার “ছাবাব” বা কার্যকারণ ছাড়াই আল্লাহ্ তায়ালা শিশুর আগমন ঘটিয়েছেন।

দ্বিতীয়টির উদাহরণ হলো ‘আগুন’। আল্লাহ্ তায়ালা আগুনকে সৃষ্টি করেছেন পুড়িয়ে দেওয়ার জন্য। আগুনের স্বাভাবিক কাজ হলো পুড়িয়ে দেওয়া। যেখানে আগুন পাওয়া যাবে সেখানে আগুনের সাথে মিলিত জিনিসের পোড়ার ঘটনা অবশ্যই পাওয়া যাবে। এখানে পোড়ার কারণ বা ছাবাব হলো আগুনের সাথে মিলিত হওয়া। এই কারণটি অবশ্যম্ভাবী।

আগুনের এ পোড়ানোর ক্ষমতা আল্লাহ্ তায়ালা-ই দিয়েছেন। ফলে আল্লাহ্ তায়ালা ইচ্ছা করলে আগুন থেকে পোড়ানোর এ ক্ষমতা যে কোনো মুহূর্তে তুলে নিতে পারেন। যেমন হযরত ইবরাহীম আ. ক্ষেত্রে হয়েছে।  হযরত আবু বকর রা.-এর যুগে একজন নবী দাবীদারের পক্ষ হতে প্রখ্যাত তাবেয়ী’ হযরত আবু মুসলিম আল-খওলানীকে আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছিল, কিন্তু আল্লাহর রহমতে আগুন তাঁকে স্পর্শ করেনি।  এখানে পুড়ে যাওয়ার কারণ (ছাবাব) “আগুনের স্পর্শ” পাওয়া যাওয়া সত্বেও পোড়ার অবশ্যম্ভাবী ঘটনা (মুছাব্বাব) পাওয়া যায় নি।

এখন প্রশ্ন হলো, আগুনকে যেহেতু নিয়ন্ত্রণ করেন আল্লাহ্ তায়ালা, সেহেতু ‘আগুনের কোনো ক্ষমতাই নেই’-এ কথা বলে আগুনে ঝাঁপ দেওয়া যাবে কি?

আল্লাহ্ তায়ালা তাঁর সৃষ্টিরাজির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের বৈশিষ্ট্য দ্বারা সৌন্দর্য মণ্ডিত করেছেন। তাঁর একটি উদাহরণ হলো, পানি। এটি একটি তরল পদার্থ। এর না আছে কোনো রঙ, না আছে কোনো স্বাদ বা গন্ধ।  অথচ কোনো প্রাণী পানি ছাড়া বাঁচতে পারেনা। এর আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো সমান্তরালভাবে মিলিত হয়ে থাকা। পানিকে কর্তন করা বা এতে গর্ত খোঁড়া অথবা প্রতিবন্ধক ছাড়া পানির মধ্যে রাস্তা তৈরী করা এ বৈশিষ্ট্যের পরিপন্থী, এটা অসম্ভব। পানির এ বৈশিষ্ট্য আল্লাহ্ প্রদত্ত। কিন্তু তিনি ইচ্ছা করলে এর ব্যতিক্রমও ঘটাতে পারেন। যেমন, হযরত মুসা আ.-এর লাঠির আঘাতে পানি চীরে খণ্ড খণ্ড হয়ে তার মধ্যে রাস্তা তৈরী হওয়া এবং তাঁর সাথে থাকা ভাজা মাছ জীবিত হয়ে পানিতে সুড়ঙ্গ তৈরী করে পানির গভীরে নেমে যাওয়া ।

প্রকৃত পক্ষে পানির নিয়ন্ত্রণতো আল্লাহ্ তায়ালাই করেন। এখন, পানির কোনো ক্ষমতা নেই- একথা বলে কি পানিতে ঝাঁপ দেওয়া যাবে?

রোগ সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ্ তায়ালা, ঔষধ বা ঔষধের প্রতিক্রিয়াও সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ্ তায়ালা। রোগের নিজস্ব কোনো ক্ষমতা নেই- এ কথা যেমন সত্য তেমনি ঔষধেরওতো নিজস্ব কোনো ক্ষমতা নেই! এখন ঔষধের কোনো ক্ষমতা নেই- একথা বলে কি আমরা ঔষধ সেবন করা বন্ধ করে দেব? আমরা কি ডাক্তারের কাছে যাওয়া বন্ধ করে দেব?

না, ঔষধ সেবন যেমন করতে হবে তেমনি আকীদা-বিশ্বাসও ঠিক রাখতে হবে যে, আল্লাহ্ তায়ালা চাইলে রোগমুক্তি হবে, নতুবা হবেনা। ঔষধ সেবন রোগমুক্তির কারণ, তবে এ কারণ অবশ্যম্ভাবী নয়।

সুস্থ ও অসুস্থ দু-ই আল্লাহ পাকের সৃষ্টি। আল্লাহ্ তায়ালার হুকুম ছাড়া মানুষ সুস্থ ও অসুস্থ কোনোটাই হয়না। আল্লাহ্ তায়ালার হুকুম ছাড়া কি কেউ অসুস্থ হতে পারে? যদি না হয়, তাহলে কেনো আমরা সুস্থ থাকার পথ অবলম্বন করি? কেনো আমরা অসুস্থ হওয়ার উপকরণগুলি এড়িয়ে চলি? কারণ হলো, আমরা যদি অসুস্থ হওয়ার উপকরণ এড়িয়ে না চলি তাহলে আল্লাহ্ তায়ালার হুকুমে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় অসুস্থতা আমাদের দেহে প্রবেশ করবে। যেমন, পচা খাবার। যে খাদ্য-পানীয় দ্বারা শরীর, মানসিকতা ও চিন্তা-চেতনার মাঝে বিভ্রাট আসতে পারে এমন খাদ্য-পানীয় আল্লাহ্ তায়ালা মুমিনদের জন্য হারাম করে দিয়েছেন।

মহান আল্লাহ্ তায়ালা যে জিনিসকে যে কাজের জন্য সৃষ্টি করেছেন সে জিনিস আল্লাহর নির্দেশে স্বাভাবিক নিয়মে সেই কাজটি করেই যাবে, যদি তিনি ব্যতিক্রমী কিছু না চান। যেমন চন্দ্র ও সূর্য।

হাত পা’র কাজ শ্রবণ নয়, আছে এ জন্যে কান

জিহ্বার কাজ স্বাদ নেওয়া, আম গাছেতে আম

সিংহের বাচ্চা সিংহই হবে, সব স্রষ্টারই বিধান,

এ সবই হলো স্বাভাবিক নিয়ম, যদি না তিনি বিপরীত চান।

বিপরীতও তিনি করে থাকেন ক্ষমতা প্রকাশের তরে,

ধারণায় যা অসম্ভব বাস্তবে তা করে।

সাগর ফুঁড়ে, পানি চীরে কেমনে অগ্ন্যুৎপাত ঘটে,

চিন্তা কর এ সবের পিছে আছেন এক মহান।

অর্থাৎ আল্লাহ্ তায়ালা অধিকাংশ সময় স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সব কিছু সৃষ্টি করেন। তবে নিজ ক্ষমতা প্রকাশের জন্য কখনও তিনি অস্বাভাবিক পন্থায়ও কিছু ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন। এক কথায়, আল্লাহ্ তায়ালার হুকুমে সব কিছু স্বাভাবিক নিয়মেই চলতে থাকে, যদি তিনি ব্যতিক্রম না চান।

এর পরের আলোচনাঃ 

"ইসলামে সংক্রামক রোগ বলতে কি কিছু নেই? (পর্ব ২)" 

দেখার জন্য অনুরধ করছি। 



No comments

Theme images by 5ugarless. Powered by Blogger.